বাউফলে সিনিয়র জুনিয়র দন্দ্বে দুই শিক্ষার্থী নিহত

বাউফলে সিনিয়র জুনিয়র দন্দ্বে দুই শিক্ষার্থী নিহত

মোঃ দেলোয়ার হোসেন, বাউফল প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর বাউফলে সিনিয়র জুনিয়রকে কেন্দ্র করে ১০ম শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থীকে হত্যা করেছে একই বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার উপজেলার সূর্যমনী ইউনিয়নের ইন্দ্রকুল গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এ নিয়ে এলাকায় শোকের মাতব। নিহত দুই শিক্ষার্থীর নাম মো. নাফিজ (১৫) ও মারুফ হোসেন (১৫)। নাফিজ উপজেলার সূয্যমনি ইউনিয়নের সিরাজ মোস্তফা আনসারির ছেলে ও মারুফ একই ইউনিয়নের বাবলু হাওলাদার ছেলে। এ ছাড়াও গুরুতর আহত হয়েছেন একই ইউনিয়নের বাবুল হাওলাদারে ছেলে সিয়াম হাওলাদার। এরা তিনজনই উপজেলার ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত বুধবার ছিল ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এস এস সি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান চলাকালে ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হাসিবুল ইসলাম ১০ম শ্রেণীর ছাত্র নাফিজকে তুই বলে সম্বোধন করে। এ সময় নাফিজ প্রতিবাদ করলে হাসিবুল ক্ষুদ্ধ হয়।
পরে অনুষ্ঠান শেষে পরীক্ষার্থীরা বাড়ি ফেরার পথে ইন্দ্রকুল স্কুলের পাশে ব্রিজের কাছে বিকাল সারে ৪টার দিকে ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসিবুলের নেতৃত্বে সৈকত, রায়হান, নাফিজদের উপর হামলা চালিয়ে পেটে ছুরি মারে। এ সময় ছুরিকাঘাতে নাফিজ, মারুফ ও সিয়াম গুরুতর আহত হয়।
আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বিকাল সারে ৫টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য আহত নাফিজ,মারুফ হোসেনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সন্ধা সারে ৭টার দিকে নাফিজ ও মারুফকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। আহত সিয়ামকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা.আব্দুর রউফ বলেন,আহতদের শরীরে কয়েকটি ছুরির আঘাত রয়েছে। তাদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ও পরিবারের কোন সদস্যদের না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
তবে হত্যার ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে সূয্যমনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাচ্ছু বলেন এমন ঘটনা সত্যিই দুঃখ জনক। তিনি শুনছেন হাসিবুল, সৈকত, রায়হান আরো কয়েকজন ছেলে নাকি এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনা আমি পরে শুনিেছ। স্কুল ক্যাম্পাসে এমন ঘটনা ঘটেছিল আমি জানতাম না। এ ছাড়া তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন,এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যস্ত থানায় কোন অভিযোগ দাখিল হয়নি। তবে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে ঘটনার দুইদিন পেরিয়ে গেলেও  থানা পুলিশ কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে না পারায় নিহত পরিবারের লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ঘটানার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। জানা গেছে,শিক্ষার্থীদের লাশ ময়নাতন্ত্রের শেষে আজ বৃহস্পতিবার আসর বাদ ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে তাদের পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হবে ।